আয়েশা আরেফিন টুম্পা এবং জান্নাতুল নাঈম এভ্রিল। দ্বিতীয় নামটি নিয়ে বিশেষ বলবার কিছু নাই। সবাই জানেন ও চেনেন ওকে। কিন্তু প্রথম নামটি হয়তো অনেকেই প্রথমবারের মতো শুনছেন। অনুমান করতেও হয়তো কষ্ট হচ্ছে না, যে প্রথম নামটিও কোন উঠতি মডেল বা শো-বিজ তারকা-টারকার হবে। তবে, কোথায় যেনো একটু খটকা আছে, কিন্তু কোথায় তা পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে না। হুম, প্রতিটি সেক্টেরেই অগ্রজ ও অনুজের নাম যখন পাশাপাশি লেখা হয় তখন কিছু অলিখিত নিয়ম মেনে চলতে হয়। অগ্রজের (বয়সে, কর্মে, খ্যাতিতে বা জনপ্রিয়তায়) নাম আগে থাকে। এ লেখার খটকাটা তবে এখানেই! সুপার সেলিব্রেটি এভ্রিলের নামের আগে অখ্যাত আয়েশার নাম! না উনি (আয়েশা) শোবিজ তারকা নন, সত্যিকারের তারকা। আমরা সাধারণত শোবিজ তারকা চিনি, সত্যিকার তারকা চিনি না। নায়ক চিনি, চিনি না অধিনায়ক।
আয়েশা আরেফিন টুম্পা। বিজ্ঞানী। ‘কৃত্তিম মানব ফুসফুস’ তৈরি করে সারা বিশ্বে হৈ চৈ ফেলে দিয়েছেন বাংলাদেশের গৌরব এ জিনবিজ্ঞানী, অথচ বাংলাদেশেরই মানুষের কাছেই পৌঁছায়নি সে কলরব। ২০১৫ সালে তিনি প্রথম ন্যানো সায়েন্সের মতো আধুনিকতম বিজ্ঞানে সফলতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন।
আয়েশা আরেফিন সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং ও বায়োটেকনোলজি বিভাগের ২০০৫-০৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তাঁর ক্যারিয়ার শুরু হয় লস আলামস ন্যাশনাল ল্যাবেরটরির বায়ো-সিকিউরিটি বিভাগে। ঐ ল্যাবের ভারতীয় গবেষক প্রখ্যাত টক্সিকোলজিস্ট রাশি আইয়ার আয়েশাকে অপ্টোজেনিক্স সংক্রান্ত গবেষণা কাজের জন্য নিয়োগ দেন। সেখানেই আয়েশার এ বিরল কৃতিত্ব অর্জন। কৃত্তিম মানব ফুসফুস এর বাইরেও কৃত্রিম অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ও কৃত্রিম টিস্যু বা কলা তৈরি, একই সাথে বিভিন্ন স্নায়বিক ব্যাধি ও মস্তিষ্কে রক্ত-ক্ষরণ নিয়েও গবেষণা মগ্ন তিনি।
আয়েশার এ সাফল্যে আমাদের মনে পড়ে যায়, নোবেল জয়ী প্রথম নারী বিজ্ঞানী ম্যারি ক্যুরি’র ( Marie Curie ) কথা। যিনি প্রথম নারী বিজ্ঞানী যে বিজ্ঞানের দুইটি ভিন্ন শাখায় দুইবার নোবেল পুরস্কার জেতেন। আমাদের আয়েশার মাথাতেও হয়তো একদিন উঠবে বিশ্বজয়ী নোবেল এর মুকুট। রূপসীর মুকুট মাথায় নিলে আমাদের কত মাতামাতি আর ওদিকে বিশ্বজয়ের মুকুট থেকে যায় নেপথ্যে।
আয়েশা