জাকিয়া সুলতানা মুক্তা

সহকারী অধ্যাপক, বাংলা বিভাগ। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।

আইন করার আগে আগপিছ ভেবে এবং মানবিক হয়ে আইন প্রণয়ন করুন

গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে তিন-চাকার যান চলুক, এটা আমি যদিও সমর্থন করি না এবং দুই-চাকার যানের ক্ষেত্রেও আলাদা করে লেন চাই প্রতিটি সড়কে। তবুও বলবো বিকল্প ব্যবস্থা না করে হুট করে এসব চালকদের ও যান চলাচলের ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা জারি করার এমন সিদ্ধান্ত সত্যিই মানা যায় না।

সরকার বরং কতগুলো স্বল্পমেয়াদী ও দীর্ঘমেয়াদী উদ্যোগ এক্ষেত্রে নিতে পারে। কিছু উদ্যোগের নমুনা এমন হতে পারে-

১. ব্যক্তিমালিকানাধীন প্রাইভেট কারগুলোর উপর করের মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে।

২. ব্যক্তিমালিকানাধীন প্রাইভেট কারগুলোকে যখন-তখন সড়কে বের হওয়ার অনুমতি না দিতে পারে।

এক্ষেত্রে নিয়ম করে দিতে পারে;

ক) এক পরিবারে একটির বেশি প্রাইভেট কার থাকতে পারবে না। থাকলে, দ্বিগুণ-তিনগুণ কর দিতে হবে।

খ) একাধিক প্রাইভেট কার থাকলে, সেই পরিবার সপ্তাহের নির্দিষ্ট দিন ব্যতীত সড়কে গাড়ি নামাতে পারবে না। অর্থাৎ একদিনে একটি গাড়িই সড়কে থাকবে, অন্যটি বাড়িতেই থাকবে। সড়কে নামাতে হলে, গাড়ি প্রতি অতিরিক্ত কর দিতে হবে। এজন্য সুনির্দিষ্ট এপের মাধ্যমে এসব গাফিলতি নিয়ন্ত্রণ করার ব্যবস্থা থাকবে।

৩. সড়কগুলোতে প্রাইভেট কারের চেয়ে পাবলিক টান্সপোর্টের পরিমাণ বাড়াতে বিভিন্ন উদ্যোগ নিতে পারে।

৪. পাবলিক পরিবহনের ক্ষেত্রে স্বল্পমূল্য থেকে শুরু করে উচ্চমূল্যের আলাদা আলাদা পরিসরের পরিবহন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে পারে।

যাতে করে কেউ চাইলে কমের মাঝে যাতায়াতের সুযোগ পাবে, আবার যদি কেউ চায় আমোদের সাথে পথ চলতে তারও সড়কে চলার পথে সুযোগ থাকবে।

৫. বিভিন্ন ধরণের পরিবহন ব্যবস্থা সৃষ্টি করা। যেমন- মেট্রোরেল, পাবলিক কার, প্রয়োজনমাফিক পাবলিক বাস ইত্যাদি।

৬. নিম্নবিত্তের রিক্সাশ্রমিকদের এখনই সড়ক থেকে উচ্ছেদ না করে তাদের জন্য স্বল্প মূল্যে কিংবা বিনামূল্যে যথাযথ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা এবং স্বল্প সুদে ঋণ দিয়ে অন্য কোন কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করিয়ে দেয়ার উদ্যোগ নেয়া।

৭. সর্বশেষে একটাই অনুরোধ, কোন আইন করার আগে আগপিছ ভেবে এবং একটু মানবিক হয়ে আইন প্রণয়ন করা।

জনগণ কিন্তু সরকারের চাকর-বাকর নয়, গণতান্ত্রিক দেশে জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস।

তাই সর্বস্তরের জনগণের প্রতি আসুন আমরা দায়িত্বশীল সবাই শ্রদ্ধাশীল হই, তাদের মূল মর্মবেদনার জায়গাটা বুঝতে শিখি; ক্ষমতার অপব্যবহার না করি।

আজকের রিক্সাশ্রমিকদের আন্দোলনের প্রতি যথাযথ কর্তৃপক্ষের সুবিবেচনার প্রতি আস্থা রাখতে চাই। কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি যাতে না সৃষ্টি হয়, এই কামনা করছি। দেশটা অশান্ত হলে আখেরে আমরা সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হবো, এটা যেনো সব পক্ষই খেয়াল রাখেন এই প্রার্থনা করছি।

 

1462 times read

নারী'তে প্রকাশিত প্রতিটি লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত নারী'র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় নারী কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। নারীতে প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।